খুলনা, বাংলাদেশ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ

উস্তায তথা শিক্ষকের সাথে আদব (পর্বঃ ০৯)

মুফতি জুবায়ের হাসান

মুসলিম ব্যক্তি উস্তায বা শিক্ষকের মর্যাদার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবে। কোনোক্রমেই যেন কথা বার্তা, শব্দ প্রয়োগ, আচার-আচারণ, উঠা-বসা, চলা-ফেরা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আদব লঙ্ঘিত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখবে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا، وَيَعْرِفْ حَقَّ كَبِيرِنَا فَلَيْسَ مِنَّا
অর্থাৎ যে ব্যক্তি বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের স্নেহ করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। -আবু দাউদ, হাদিস ৪৯৪৩

সুতরাং মুসলিম ব্যক্তি উস্তাযের আদব রক্ষার ব্যাপারে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলবেঃ

১। উস্তাযের আগে বেড়ে কথা বলবে না, উস্তাযের সামনে প্রয়োজন অতিরিক্ত জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকবে, তাঁদের দিকে পিঠ দিয়ে ও পা ছড়িয়ে বসবে না, এক সঙ্গে চলার সময় তাঁদের সামনে সামনে চলবে না ও তাঁদের সামনে অহেতুক কথা বলা থেকে বিরত থাকবে।

২। উস্তাযের সাথে ভক্তি সহকারে কথা বলা, ভক্তি সহকারে তাঁদের দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং শারীরিক ভাবে কাঁচুমাচু ভাব প্রকাশ করা। কথা-বার্তা ও আচার-আচরণ সবকিছুইতেই বিনয় থাকতে হবে। দুনিয়ার সব ক্ষেত্রেই খোশামোদ-তোষামোদ নিন্দনীয়; একমাত্র উস্তাদের বেলায় তা প্রশংসনীয়।

৩। উস্তাযের খেদমতে আত্ননিয়োগ করা ও তার অনুমতি ব্যতীত তার থেখে দূরে না যাওয়া। উস্তায অভাবী এবং ছাত্র স্বচ্ছল হলে উস্তাযের বৈষয়িক সহযোগিতা করা এবং তাঁদেরকে হাদিয়া-তোহফা প্রদান করাও তাঁদের অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।

৪। কোন কারণে উস্তায অসন্তুষ্ট হলে বা উস্তাযের মেজায পরিপন্থী কোনো কথা বলে ফেললে সাথে সাথে নিজের ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং উস্তাযকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করা। উস্তায শাসন করলে তাঁর নিন্দা-শেকায়েত না করা এবং মন খারাপ না করা উচিত।

৫। ছাত্রের কর্তব্য হল মনোযোগের সাথে উস্তাযের বক্তব্য ও ভাষণ শ্রবন করা, অন্যমনষ্ক না হওয়া এবং উস্তাযের কথা ভাল করে ইয়াদ/মুখস্ত করা। পাঠ দানের সময় সম্পূর্ণ নীরব থাকা উচিত। এদিক-সেদিক তাকানো, কথা-বার্তা বলা বা হাসি তামাশায় লিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ বর্জনীয়। নিজের কোন ত্রুটি হলে উস্তাদের সামনে অকপটে তা স্বীকার করে নেয়া কর্তব্য। অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমানিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত না হওয়া উচিত। উস্তাযের কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সে জন্য উস্তাযের প্রতি ভক্তি হারিয়ে না বসা বরং তার এমন কোন সুব্যাখ্যা বের করা, যাতে উস্তাযের সম্মান রক্ষা পায়। অবশ্য স্পষ্টতই উস্তায থেকে কোনো অন্যায় সংঘটিত হলে তার সমর্থন না করা চাই।

৬। শাগরিদকে উস্তাযের খেদমতে হাজির হয়ে ইলম শিক্ষা করতে হবে। শাগরিদের নিকট পড়াবার জন্য আসার কষ্ট উস্তাযকে না দেয়াই উত্তম। উস্তায কোনো ছাত্রের জন্য কোনো বিশেষ বিষয় বা বিশেষ বই পড়া ক্ষতিকর মনে করে নিষেধ করলে ছাত্রের পক্ষে তা থেকে বিরত থাকা উচিত।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যাদের থেকে দ্বীনী মাসয়ালা মাসায়েল শিক্ষা করা হয় তারাও উস্তায বলে গন্য। এমনকি যাদের প্রণিত দ্বীনী কিতাবপত্র দ্বারা কেউ উপকৃত হয়, এ নিয়ম অনুযায়ী তাঁরাও উস্তায এবং সে তাদের ছাত্র বলে গণ্য। উস্তাযের ন্যায় তাঁদেরও হক রয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফিক দান করুন।

খুলনা গেজেট/কেএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!